হনুমানজী কেন গায়ে সবসময় সিঁদুর মেখে থাকেন।

হিন্দু ধর্মের অন্যতম প্রবিত্র মহাকাব্য হলো রামায়ণ। এই মহাকাব্যে ভগবান বিষ্ণু রাম অবতার রূপে জন্মগ্ৰহণ করেন ।অত্যাচারী রাক্ষস রাজ রাবনকে বধ করার জন্য। শ্রী রামচন্দ্রকে সাহায্য করার জন্য বিভিন্ন দেবতারা অন্য অন্য রূপ নিয়ে এসেছিলেন। ভগবান শিব হনুমানের রূপ নিয়ে আসে এবং রামচন্দ্রকে সহায়তা করেন।

হনুমানজী ছিলেন মহাবীর, সাহসী,তেজস্বী শক্তিশালী। তাহার অসাধ্য বলে কিছু ছিলো না। ছোটবেলায় সূর্যদেবকে দেখে মুষ্টি ফল বলে গিলে নেয় আবার দেবতারা অনুরোধ করিলে ছেড়ে দেয়।সাধু সন্ন্যাসীদের বিরোক্ত ও অত্যাচার করতেন।পরে তিনি তপস্যী হয়েছিলেন। সমস্ত জীবের প্রতি তার ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা ছিলো অসীম। তিনি ছিলেন দয়ালু এবং বুদ্ধিমান।

রামচন্দ্রের বনবাসের সময় সীতাকে লঙ্কার রাজা রাবন কৌশল করে চুরি করে নিয়ে যায়। তার পর সীতার খোঁজে রাম ও লক্ষন ঘুরে ঘুরে বেড়ায় সেই সময় হনুমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। এরপর হনুমানজী সীতার সন্ধানের জন্য মহাসুমদ্র পার হয়ে লঙ্কায় রাবনের রাজ্যে আসেন। সীতার সন্ধান পাওয়া পর রাবনের রাজবাড়ী আগুনে পুড়িয়ে তজ-নজ করে রামের নিকট ফিরে আসেন এবং সীতার সন্ধান দেয়। আবার রাম রাবনের যুদ্ধের সময় রামের হয়ে যুদ্ধ করে একাধিক বীর যোদ্ধাকে বধ করেন। শুধু তাই নয় যুদ্ধের সময় তিনি রাম ও লক্ষনকে একাধিক বার মৃত্যুর হাত থেকে তাদের রক্ষা করেন।

সীতা উদ্ধারের পর এক দিন হনুমানজী দেখলেন যে সীতা দেবী তাঁর সিঁথিতে সিঁদুর পরছেন। তাই দেখে তিনি কৌতুহলী হয়ে সীতাকে জিজ্ঞাসা করলেন কেন তিনি সিঁদুর পরেন। সীতা দেবী বললেন তিনি ভগবান রামচন্দ্রের দীর্ঘায়ু মঙ্গল ও সুখের জন্য সিঁদুর পরেন। এই কথা শুনে হনুমানজী ভাবলেন, সিঁদুর যদি ভগবান শ্রী রামচন্দ্রের দীর্ঘায়ু মঙ্গল ও সুখের জন্য এতো গুরুত্বপূর্ণ হয়,তা হলে তিনি নিজে ও সিঁদুর মাখবেন। তাই তিনি তার পুরো শরীরটা সিঁদুর মেখে নিলেন।এই ঘটনা দেখে ভগবান রামচন্দ্র খুব আনন্দিত হয়েছিলেন। তিনি হনুমানজীকে আশির্বাদ দেন, বলেন যদি কোন ভক্ত হনুমানজীকে সিঁদুর দিয়ে পূজা করে, তাহলে সেই ভক্তের সকল ইচ্ছা পূরণ হবে। এই কারণে হনুমানজীকে সিঁদুর দিয়ে পূজা করা হয়। এবং ভক্তরা বিশ্বাস করে যে এতে হনুমানজী তুষ্ট হয়ে তাঁদের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করেন।

সিঁদুরের রঙ লাল যা শক্তি ও সাহসের প্রতীক। হনুমানজী হেলেন শক্তি ও সাহসের দেবতা তাই সিঁদুরের সঙ্গে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া ও সিঁদুর মাখার মাধ্যমে হনুমানজী তার ভক্তদের প্রতি তার অগাধ ভালোবাসা ও ভক্তি প্রকাশ করেছেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top