দ্বাপরে ধর্ম এবং অধর্ম ছিল সমান সমান। দ্বাপরে পর শুরু হয় কলিযুগ। এই যুগে ধর্ম একভাগ অধর্ম তিন ভাগ। কলিযুগে মানব ,মহামানব,অবতার জ্ঞানী,সাধক, সবাই থাকবে। কলিযুগের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এবং শেষের দিকে মানুষের আয়ু, ধর্ম, ও বল কমতে থাকবে, রোগব্যাধি বাড়বে। তপস্যা, যাগ,যজ্ঞ লোপ পাবে, পূজা আচার হবে কেবল মাত্র আনন্দের জন্য। ব্রাহ্মন বেদ পাঠ করবে না, পৈতা দ্বারা ব্রাক্ষন বলে পরিচিত হবে। যশের আশায় ধর্ম সাধনা করবে, জ্ঞান লাভ না করে জ্ঞানী মানুষ বলে আখ্যা পাবে। কেবলমাত্র ভণ্ডামী ও বেশী কথায় দ্বারা পণ্ডিত ব্যক্তি বলে পরিগণিত হবে। ব্রাহ্মনগন উদরপরান ও ইন্দ্রিয় পরবশ হবে। মদ্য ও মাংস ভক্ষনে শূদ্রদের সমতুল্য হবে। ব্রাহ্মনরা শূদ্রদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক করবে। শূদ্ররা ব্রাহ্মনদের উপর কর্তৃত্ব করবে। রাজারা যোগ্য শাসন করবে না। প্রজাদের প্রভু ভক্তি হারিয়ে যাবে। অন্যায় অবিচার দুর্নীতিতে ছেয়ে যাবে, হিংসার ভরে যাবে প্রতিটি গৃহ। নোংরামি অশ্লীলতা বেইমানি নেমকহারামিতে ভরে যাবে। যে যত বেশি ভণ্ড আর ধরিবাজ সেই ব্যক্তি হবে তত বড় বলবান। মনুষ্যত্ব বিবেক বলে কোনো বস্তু থাকবে না। উপকারীর উপকার স্বীকার করবে না। টাকার জন্য মানুষ যত নীচে নামতে হয় তাতেও কুন্ঠাবোধ করবে না। অথসম্পদ এক শ্রেনীর মানুষের কাছে থাকবে। ধরিবাজ ও বলশালী দস্যুরা গলাবাজি ও ভয় দেখিয়ে মানুষের কাছে মানুষ খ্যাতি ও শ্রেষ্ট হয়ে দেশ শাসনের দায়িত্বে থাকবে। সুরা এবং নারী হবে অধিকাংশ মানুষের প্রধান ভোগ্য বস্তু। কলিযুগের শেষের দিকে ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের সংখ্যা বেশি হবে। সব কাজেই মেয়েরা বেশি প্রাধান্য পাবে। মেয়েরা লজ্জাবিহীনা, ছলনাময়ী হবে। স্ত্রীরাই স্বামী তথা সর্বত্র কর্তৃত্ব করবে। কলিযুগে নারী ও পুরুষ পরস্পরের আকর্ষন থেকে বিয়ে হবে। ছেলেরা আর শ্বশ্তরবাড়ীতে বিবাহ করতে আসবে না। রাস্তাঘাটে, মন্দিরে, মাঠে বিবাহের কাজ অনুষ্ঠিত হবে। তা কেবল চন্দ্র সূর্যকে অথবা গাছপালাকে সাক্ষী রেখে। মা বাবার প্রতি মোনভাব পশুদের মতো হবে। অল্পবয়সে মদ্যপান , অকাল মৃত্যুতে ভরে যাবে, মানী ব্যক্তি সম্মান পাবে না, গুনীর বিচার হবে না, জন্মভূমি ছেড়ে গিয়ে অন্যত্র বাস করবে। সুখ, আয়ু , বল, রূপ, ধর্ম, কাম একটু একটু করে ক্ষীন হতে থাকবে। শান্তি বলে কোনো কিছু থাকবে না। স্থেচ্ছাপনার ভরে যাবে,পাপে সম্পূর্ণ পূর্ণ হয়ে উঠবে ধরা। মানুষ যন্ত্রের মতো পরিচালিত হবে, তখনই কলির শেষ হবে। ভগবান বিষ্ণুদেব কল্কি অবতার রূপে জন্মগ্ৰহন করে অস্ত্র দিয়ে অত্যচারীদের নিধন করবে আবার শুরু হবে সত্যযুগ।